ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পরিকল্পনায় তরুণদের চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন ঘটাতে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তরুণ সমাজের অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে হবে।
ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের ১৩৬তম অধিবেশনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে তরুনদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
গবেষণাধর্মী সংগঠন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সিআরআই’র উদ্যোগে সংসদ সদস্যদের সাথে বিভিন্ন পেশার ২শ’ তরুণ প্রতিনিধির এ মতবিনিময় সভার মূল বিষয় ছিল ' বৈষম্য হ্রাসে আলোচনা’।
জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত তরুণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তরুণ উদ্যোক্তারা এতে অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) এ্যাসেম্বলিকে সামনে রেখে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল তরণদের চাওয়া বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পরামর্শ নিয়ে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা।
পাঁচ পর্বে বিভক্ত এই অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য, গভর্নেন্স এবং সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য এবং আইন ও পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সামনে তরুণরা বেশ কিছু ইস্যু তুলে ধরেন।
সম্পদের অসম বণ্টন, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার ব্যবস্থা, দক্ষ কর্মী বাহিনী তৈরি, সরকারের বিভিন্ন বিভাগে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ, উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয় তাদের আলোচনায় প্রাধান্য পায়।
তরুণদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা ও পরামর্শ শুনে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন অসাধারণ কিছু তরুণ রয়েছে যাদের নতুন-নতুন পরামর্শ ও পরিকল্পনা নিয়ে জনকল্যাণমূলক কাজ হচ্ছে।
সারাবিশ্বের মাত্র ২ ভাগ আইন প্রণয়নকারি প্রতিনিধি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য আইপিইউ অ্যাসেম্বলিতে অংশ গ্রহণ করবে বলে সাবের হোসেন চৌধুরী উল্লেখ করেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পরিকল্পনা প্রণয়নে তরুণদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তিনি বলেন,নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তরুণদের অংশগ্রহণ যথেষ্ট না হলে জাতীয় পর্যায়ের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের চিন্ত-চেতনার প্রতিফলন ঘটার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ে। এমন জাতীয় পরিকল্পনা কোনভাবেই তরুণদের জন্য উপযোগি হবে না।
সাবের হোসেন চৌধুরী জানান, বৈষম্য দূর করার যে পরামর্শ এই আলোচনায় উঠে এসেছে এবং এর আগে ৩০ জন তরুণের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যে পরামর্শগুলো আমরা পেয়েছি, তা আইপিইউ অ্যাসেম্বলিতে উপস্থাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ ব্রিটেনের 'ইকুয়ালিটি অ্যাক্ট-২০১০'র প্রসঙ্গ উপস্থাপন করে বলেন,আমাদের দেশে এ ধরণের একটি আইন প্রণয়নের জন্য চেষ্টা করা উচিত, যার মাধ্যমে যে কোন ধরণের বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণ নিরাপত্তা লাভ করবে। দৈনন্দিন জীবনে এই বৈষম্য সরকার বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেখান থেকেই হোক না কেন, আইন তার নিরাপত্তা দেবে।’
সংসদ সদস্য ওয়াসেকা আয়শা খান, কাজী নাবিল আহমেদ ও ফরহাদ হোসেন এবং কমনওয়েলথ ইয়ুথ হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্কের শেহরিন শ্রাবণ তিলোত্তমা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।