Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন
  • ১২ বৈশাখ, ১৪৩১
সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৭ মার্চ ২০১৭

শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে অভিভাবকদের আহবান প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশন তারিখ : 2017-03-27

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার অভিভাবক এবং শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধভাবে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের নৈতিক ও আদর্শগত শিক্ষা দিয়ে আগামীর নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষম ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের যে প্রজন্ম তারাই একদিন শিক্ষা-দীক্ষায় পরিপূর্ণ হয়ে উন্নত মানবসম্পদে পরিণত হবেন। এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সোনার বাংলাদেশ গড়ার সোনার ছেলে-মেয়ে হিসেবে নিজেরা তৈরী হবে। সেটাই অমি আশা করি।’ তিনি প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন-‘সকল ছেলেমেয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবন লাভ করবে এবং ভালভাবে চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. সালাহউদ্দিন অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন এবং শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ ডিসপ্লে উপভোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ,সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, চলবে এবং কঠোর হাতে তা আমরা দমন করবো। আজকে তোমরা বিভিন্ন স্কুল ও প্রতিষ্ঠান থেকে সমবেত হয়েছো। সেই সাথে সাথে শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ আপনারাও এখানে আছেন। আমি সবাইকে এইটুকু বলবো- সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন উন্নত জীবন পায় সৎচরিত্রবান হয় এবং লেখাপড়ার পাশাপাশি মানুষের মত মানুষ হয় এবং আগামী দিনের বাংলাদেশকে গড়ার জন্য যেন এখান থেকেই নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলে।
তিনি বলেন, আজকে আমি প্রধানমন্ত্রী হয়েছি এবং আজকের যারা শিশু, আমি মনে করি তাদের মধ্য থেকেই আগামীতে কেউ না কেউ প্রধানমন্ত্রী হবেন। মন্ত্রী হবেন, অফিসার হবেন, বিভিন্ন সেনা- নৌ ও বিমানবাহিনী থেকে শুরু করে পুলিশ বাহিনী, বিজিবি কর্মকর্তা হবেন। তারা দেশকে গড়ে তুলবেন। দেশকে উন্নত সমৃদ্ধশালী করে তুলবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তির কর্মসূচীকে এবার আন্দোলনে রূপ দিতে হবে। তবেই আমরা গড়ে তুলতে পারব ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’। আমরা স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।
এই প্রসঙ্গে ১৯৭৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অংশ বিশেষ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা সংগ্রামের সমাপ্তি এবং অর্থনৈতিক মুক্তিযুদ্ধের শুরু। এই যুদ্ধে এক মরণপণ সংগ্রাম আমরা শুরু করেছি। এই সংগ্রাম অনেক বেশী সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য। তবে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থেকে কঠোর পরিশ্রম করি এবং সৎ পথে থাকি তবে, ইনশাল্লাহ জয় আমাদের অনিবার্য।’
প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট স্মরণ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতার নেতৃেত্ব শুরু হয়। ২৫ মার্চ কালরাতে যখন পাকিস্তনী সামরিক জান্তা নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা শুরু করে তখন বঙ্গবন্ধু ২৫ মার্চের শেষ এবং ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরআগে ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুুত করতে ঘোষণা দেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এর মাধ্যমে তিনি একটি সম্পূর্ণ গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার দিক-নির্দেশনা দিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। জাতির পিতা যে ঘোষণা দিতেন বাঙালি জাতি তা মেনে চলতো। তাঁর নির্দেশনায় তখন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে বাঙালি জাতি প্রতিরোধ শুরু করলো এবং সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা মহান বিজয় অর্জন করি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন জাতি। জাতির পিতা স্বাধীনতা ঘোষণার পর তাঁকে পাকিস্তানী বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তিনি কারাবন্দী থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানোর ষড়যন্ত্র করা হয়। কিন্তু ততদিনে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধ বিজয় অর্জন করি এবং আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসেন। ফিরে এসেই এই রেসকোর্স ময়দানে বাংলাদেশ কিভাবে চলবে তাঁর দিক-নির্দেশনা দিয়ে বক্তব্য দেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলা শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের জন্য শিশু অধিকার আইন করে যান, প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক এবং বাধ্যতামূলক করে যান। মেয়েদের শিক্ষা মাধ্যমিক পর্যন্ত অবৈতনিক করে দেন। তিনি আমাদেরকে একটি সংবিধান দেন যেখানে সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতের দায়িত্ব নিয়েছেন সরকার। তিনি ক্রমেই একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশকে গড়ে তুলছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করে দিয়ে পরিবার- পরিজনসহ জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়।
সে সময় বিদেশে থাকায় প্রধানরমন্ত্রী ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে গেলেও পরবর্তী সরকার তাদের আর দেশে ফিরতে না দেয়ায় তাঁরা ৬ বছর রিফিউজি জীবন যাপনে বাধ্য হন বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নত করা এবং জাতির পিতার অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করার জন্য ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁকে সভাপতি নির্বাচন করলে তিনি দেশে ফিরে আসেন ।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। যার কথা জাতির পিতাই তাঁর ৭ মার্চের ভাষণে বলে গেছেন ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবানা। ’ তবে, অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে ২১টা বছর এদেশের মানুষকে দাবায়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে। কিস্তুু আমরা ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যে কাজ শুরু করেছি আজও দেশের মানুষ তাঁর সুফল পাচ্ছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ঋণ দিচ্ছে, ন্যয়্যমূল্যে কৃষি উপকরণ- সার দিচ্ছে, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি-উপবৃত্তির পাশাপাশি প্রিপ্রাইমারী থেকে মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিবছর ১ জানয়ারি বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তিবরণ করছে। স্বাস্থ্যসেবাকে দোড়গোঁড়ায় আনতে কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়ে সেখান থেকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। ডিজিটাল কনটেন্টসমৃদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে স্কুলে স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম, ডিজিটাল ক্লাশরুম গড়ে তোলা হচ্ছে। সকলের নাগালের মধ্যে ইন্টারনেট সেবাকে নিয়ে এসে ঘরে বসেই অর্থ উপার্জনের জন্য আউটসোর্সিং এবং লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং কোর্স চালু করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তির কর্মসূচীকে এবার আন্দোলনে রূপ দিতে হবে। তবেই আমরা গড়ে তুলতে পারব ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’। আমরা স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।
এই প্রসঙ্গে ১৯৭৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অংশ বিশেষ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ঊনিশ’শ একাত্তর সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা সংগ্রামের সমাপ্তি এবং অর্থনৈতিক মুক্তিযুদ্ধের শুরু। এই যুদ্ধে এক মরণপণ সংগ্রাম আমরা শুরু করেছি। এই সংগ্রাম অনেক বেশী সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য। তবে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থেকে কঠোর পরিশ্রম করি এবং সৎ পথে থাকি, ইনশাল্লাহ জয় আমাদের অনিবার্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই যে আমাদের ছেলে-মেয়েরা মন দিয়ে লেখাপড়া শিখবে এবং অভিভাবক ও শিক্ষকের কথা শুনে তাদের মান্য করে চলবে এবং কখনও কোন মাদক বা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে না।

প্রকাশনাঃ বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

শেখ রাসেল পদক ২০২৪

 

জরুরি হটলাইন

ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রা

স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১

মুজিব১০০ আ্যাপ

নবস্পন্দন