মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নিরাপদে ফেরত পাঠানো শুরু করতে আজ দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
এই চুক্তির আওতায় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে ফেরত পাঠানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লিউজি) গঠন করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা পদ্মায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব ইউ মিন্ট থু নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের আগে মিয়ানমারের পারমেনেন্টে সেক্রেটারির নেতৃত্বে মিয়ানমারের ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন।
রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে সম্পাদিত এই চুক্তিতে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে ফেরত পাঠানো, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরুর প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণে জেডব্লিউজি গঠনের কথা বলা হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং স্টেট কাউন্সিলের অফিসের ইউনিয়ন মিনিস্টার ইউ চ্য টিন্ট সোয়ে‘ অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেসড পারসনস ফরম রাখাইন স্টেট’ (রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষদের ফিরিয়ে আনার সমঝোতা) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
আজকের চুক্তি অনুযায়ী জেডব্লিউজি রোহিঙ্গাদের ফেরার বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এরমধ্যে রয়েছে- যাচাই প্রক্রিয়া, সময়সূচি, পরিবহণ, আনুসঙ্গিক আয়োজন, অভ্যর্থনা প্রক্রিয়া, নির্ধারিত মেয়াদকালে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর জন্য যোগাযোগ। জেডব্লিউজি গোটা প্রক্রিয়া মূল্যায়ন করবে এবং প্রতি তিনমাসে নিজ নিজ সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে।
জেডব্লিউজি ইউএনএইচসিআর’র এবং জাতিসংঘের স্বীকৃত অন্যান্য সংস্থা এবং পুনর্বাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আগ্রহী আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা নেবে।
জেডব্লিউজি চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু নিশ্চিত করবে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, উভয় দেশ থেকে ১৫ সদস্যের সমন্বয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ জেডব্লিউজি) গঠিত হবে।