১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জল অধ্যায়গুলোর মধ্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ফসল আজকের স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশে ৭ কোটি জনতা পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জল ভূমিকা রেখেছিল। যুদ্ধের সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সকল শহীদের স্মরণে ক্যাম্পাসে কয়েকটি স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নিমার্ণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৯৭২ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠা করে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা। মুক্তিযুদ্ধর ওপর এটি ছিল দেশের প্রথম জাদুঘর। এই জাদুঘরে তিনটি গ্যালারী রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাস দিয়ে গ্যালারী শুরু। পাকিস্তানে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির জন্য ভাষা আন্দোলনের মুহূর্তগুলো এতে স্থান পেয়েছে। এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মুহূর্তগুলো রেয়েছে।
পাকিস্তানী বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠিত মুক্তি বাহিনী, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও অভিযানসহ সমগ্র মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা স্থান পেয়েছে। গ্যালারীতে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান বাহিনীর অপারেশন সার্স লাইট নামে বাঙ্গালী বুদ্দিজীবী, ছাত্র, হিন্দু এবং আওয়ামী লীগ নেতাদেরসহ বাঙ্গালীদের নৃশংস হত্যাকান্ডের দৃশ্যও এতে স্থান পেয়েছে।
জাদুঘরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকসহ শহীদ অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহ্র স্মৃতিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। গ্যালারীতে যুদ্ধে ব্যবহ্রত মুক্তিবাহিনীর অস্ত্র, পাকিস্তানী বাহিনীর নৃশংসতার শিকার অনেক মুক্তিবাহিনী ও বেসামরিক লোকদের ব্যবহৃত জিনিষপত্র ও যুদ্ধর পর তাদের পরিবারের অনেক দানও স্থান পেয়েছে। পাক সেনাদের হাতে নিহত অনেক বেসামরিক লোকদের গণকবর থেকে উদ্ধর করা মানব কঙ্কালও স্থান পেয়েছে।
রাবি সূত্র জানায়, পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতার অভিযোগ আনার পর থেকে রাবির পাঁচ শিক্ষক যথাক্রমে ড. আবদুল বারি, ড. গোলাম সাকলাইন, আজিজুল হক, শেখ আতাউর রহমান এবং আবদুর রহমান পলাতক রয়েছে।
দালালীর অভিযোগে অপর ছয়জন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন মকবুল হোসেন, আহমেদ মুহম্মদ পাতেল, সোলায়মান মন্ডল, উম্মল বারি বাঘি, জিল্লুর রহমান কলিম এ সারামি।
সূত্র আরো জানায়, অপর দুজন শিক্ষক যথাক্রমে আহমেদ উল্লাহ খান ও ইবনে আহমেদ এর বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সৈন্যদের সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয় এবং স্বাধীনতার পরই তারা পালিয়ে যায়।