Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন
  • ১০ বৈশাখ, ১৪৩১
সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশে ফরাসি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশন তারিখ : 2017-12-14

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফরাসি বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে ফরাসি কোম্পানিগুলোর প্রতি বাংলাদেশে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন। 

ফ্রান্সের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক প্রাতঃরাশ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে সার্বিকভাবে শিল্পায়িত করতে আমরা দেশজুড়ে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আমি মনে করি প্রচলিত বাণিজ্যিক ক্ষেত্র ছাড়াও বাংলাদেশের অবকাঠামো, জ্বালানি ও সামুদ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও আরো ফরাসি বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। ফ্রান্সের বৃহত্তম নিয়োগকারী ফেডারেশন মুভমেন্ট অব দি এন্টারপ্রাইজেস অব ফ্রান্স (এমইডিইএফ) বুধবার সকালে এখানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্যারিস লা গ্রাঁদে এ প্রাতঃরাশ বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ফ্রান্সের তার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। আর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে বিনিয়োগ প্রয়োজন। 
তিনি বলেন, ‘আপনাদের যেমন প্রতিযোগিতামূলক বিকল্প উৎস খোঁজা দরকার, তেমনি আমাদেরও রফতানি গন্তব্য বহুমুখী করা প্রয়োজন। আর এ দুয়ের সমন্বয় আমাদের দু’দেশের জন্যেই লাভজনক অংশীদারিত্বের একটি যথার্থ পরিবেশ তৈরি করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে কূনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে সহযোগিতার সম্ভাবনাময় নতুন নতুন ক্ষেত্র নিয়ে ভাবার এটি একটি উপযুক্ত সময়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সুযোগ ও সম্ভাবনার দেশ, যার বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নীতি এ অঞ্চলের অন্যতম সেরা বন্ধুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, অনেক সমস্যা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গতবছর ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বিপুল সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছে। 
বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বেড়েছে দেখে তিনি উৎসাহিত বোধ করছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিমুখী বাণিজ্যের পরিমাণ দুইশ’ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।’ 

ফ্রান্স বর্তমানে বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ক্রমসম্প্রসারণশীল অব্যাহত দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণ ও তা উৎক্ষেপণের কন্ট্রাক্ট লাভ করে ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস নামের সংস্থাটি। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, ২০১৮ সালের মার্চে এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সকল প্রস্তুুতি সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ফ্রান্সের বহুজাতিক কোম্পানী ‘টেকনিপ’ ইস্টার্ন রিফাইনারীর দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণে কাজ করছে।
বাংলাদেশে ২০১৬-১৭ সালে ফরাসি বিনিয়োগ (এফডিআই) ১৪ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলারের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ছাড়দেয়া অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য ফ্রান্সের কোম্পানীগুলোকে প্রবলভাবে উৎসাহিত করছি। 
শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের একটি বিশাল বাজার রয়েছে। তিনি বলেন, ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাদেশ হচ্ছে আসিয়ান ও সার্কভুক্ত দেশসমূহের প্রাকৃতিক প্রবশ পথ। 
বাংলাদেশ আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে এই খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগও করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশে কেউ বিনিয়োগ করলে সমগ্র অঞ্চলের প্রায় ২০০ কোটি মানুষের বাজারে প্রবেশ করতে পারবে। 
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১০৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এ পযর্ন্ত এসেছে। আমরা দারিদ্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাষণ এবং সামাজিক নিরাপত্তার মতো খাতগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছি। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাইসওয়াটারহাউস কোপারস্ (পিডব্লিউসি) চলতি বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশকে আগামী তিন দশকে বিশ্বের তিনটি দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেশের একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনীতির কথা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।’
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্র’র সঙ্গে গতকালকের সফল বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণ এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৃহীত প্রচেষ্টায় ফরাসি কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা প্রদানের বিষয় নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, এই ওয়ান প্লানেট সামিটে তাঁর অংশগ্রহণ প্যারিস ক্লাইমেট এগ্রিমেন্ট (কপ-২১)-এ বাংলাদেশের সমর্থনের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সামনে এগিয়ে যেতে গৃহীত পদক্ষেপে ফ্রান্সের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সারাদেশে প্রায় ৪৫ লাখ হোম সোলার সিস্টেম (এসএইচএস) স্থাপন করেছে। এতে অন্ততঃ ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের সেবা পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা এমইডিইএফ নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের সফর বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অবশ্যই আরো অবদান রাখবে। এমইডিইএফ ইন্টারন্যাশনালের সিইও ফিলিপ গাউটিয়ের’র নেতৃত্বে ফ্রান্সের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বেনকো স্যান্টানডের, বিপিফ্র্যান্স ফিনান্সসিমেন্ট, ক্রেডিট এগিকোলি কর্পোরেট এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক, গ্যামাল্টো টেক, নেভাল গ্রুপ, এসটিএক্স ফ্রান্স, ফ্যাঙ্ক চাউটি, ফেব্রিসি বাউনেইক্স ও থালেস এলিনিয়া স্পেসের মত বিখ্যাত ফ্রান্স কোম্পানির প্রতিনিধিগণ অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

প্রকাশনাঃ বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

শেখ রাসেল পদক ২০২৪

 

জরুরি হটলাইন

ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রা

স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১

মুজিব১০০ আ্যাপ

নবস্পন্দন